৫২৬। ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নবী সাল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জুমুআর দিন তোমাদের কোন ব্যক্তির ঘুমের আবেশ আসলে সে যেন নিজ জায়গা হতে উঠে যায়।
-সহীহ। সহীহ আবু দাউদ- (১০২৫), তা’লীক ইবনু খুজাইমাহ (১৮১৯)
আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
৫৪২। আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদা (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি (বুরাইদা) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল ফিতরের দিন কিছু না খাওয়া পর্যন্ত নামাযে বের হতেন না এবং ঈদুল আযহার দিন নামায না আদায় করা পর্যন্ত কিছু খেতেন না। —সহীহ। ইবনু মাজাহ– (১৭৫৬)।
২৪৩৮। আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রহঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি একটি দলের সাথে ইলিয়া (বাইতুল মাকদিসের একটি নগর) নামক জায়গায় অবস্থান করছিলাম। দলের একজন লোক বলল, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ আমার উম্মাতের একজন লোকের সুপারিশে তামীম বংশের সকল ব্যক্তির চেয়ে বেশি সংখ্যক ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আপনি ব্যতীত অন্য কারো সুপারিশে? তিনি বললেন, হ্যাঁ আমি ছাড়াই। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর বর্ণনাকারী উঠে দাঁড়ালে আমি প্রশ্ন করলাম, ইনি কে? লোকেরা বলল, ইনি হলেন ইবনু আবূল জায’আ (রাঃ)।
সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪৩১৬)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব। ইবনু আবূল জায’আ হলেন আবদুল্লাহ (রাঃ)। আমরা তার নিকট হতে এই একটি হাদীসই জেনেছি।
২৪৬৩। হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আমি কিছু ধন-সম্পদ চাইলাম। তিনি আমাকে (সেটা) দিলেন। আমি আবার চাইলে তিনি আবারো দিলেন। আমি আবার চাইলে তিনি আবারো দিলেন, তারপর বললেন, হে হাকীম! ধন-দৌলত হলো সবুজ-শ্যামল ও লোভনীয় বস্তু। সুতরাং যে লোক এটাকে উদার মনে গ্রহণ করবে, তার জন্য এতেই মঙ্গল ও রহমত প্রদান করা হবে। আর যে লোক তা লোভাতুর মনোভাব নিয়ে গ্রহণ করবে, সে তাতে বারকাত ও মঙ্গলপ্রাপ্ত হবে না। সে এমন লোকের সাথে তুলনীয়, যে খাদ্য গ্রহণ করে প্রচুর কিন্তু তৃপ্ত হয় না। উপরের হাত (দাতার হাত) নিচের (প্রার্থনাকারীর) হাত হতে উত্তম।
হাকীম (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! সেই মহান সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্যসহকারে প্রেরণ করেছেন। আমি মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত আপনার পর আর কারো নিকট প্রার্থনা করে তার সম্পদে কমতি করবো না। তারপর আবূ বকর (রাঃ) তার আমলে হাকীম (রাঃ)-কে কিছু দেয়ার জন্য ডেকে পাঠান। কিন্তু তিনি তা নিতে অসম্মতি জানান। তারপর উমর (রাঃ)-ও তাকে কিছু দেয়ার জন্য ডেকে আনেন। কিন্তু তিনি কিছু নিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন। অতঃপর উমার (রাঃ) বললেন, হে মুসলিম সমাজ! আমি হাকীমের ব্যাপারে তোমাদেরকে সাক্ষী করছি যে, আমি তাকে গানীমাতের সম্পদ হতে তার প্রাপ্য উপস্থাপন করেছি, কিন্তু তিনি তা নিতে অসম্মতি জানান। তারপর হাকীম (রাঃ) মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পরে আর কারো নিকট হতে কোন কিছুই নেননি।
সহীহঃ বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এই হাদীসটি সহীহ।
২৩৩৭। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন আদম-সন্তানের অধীনে যদি দুই উপত্যকা ভর্তি স্বর্ণ থাকে তবুও সে তৃতীয় একটি স্বর্ণভর্তি উপত্যকা অর্জনের ইচ্ছা করবে। মাটি ব্যতীত অন্য কিছুই তার মুখ ভর্তি করতে পারবে না। যে লোক তওবা করে আল্লাহ তা’আলা তার তওবা কুবুল করেন।
সহীহ, তাথরীজ মুশকিলাতুল ফাকরি (১৪) বুখারী, মুসলিম।
উবাই ইবনু কা’ব, আবূ সাঈদ, আইশা, ইবনুয যুবাইর, আবূ ওয়াকিদ, জাবির, ইবনু আব্বাস ও আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ এবং এই সুত্রে গারীব।
২৩৮৫। আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট একজন লোক এসে প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসূল! কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে দাঁড়িয়ে গেলেন। নামায সমাপ্তির পর তিনি প্রশ্ন করেনঃ কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার প্রসঙ্গে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়? সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! এই যে আমি।
তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কিয়ামতের জন্য কি প্রস্তুতি নিয়েছ? সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অবশ্য তেমন লম্বা (নাফল) নামাযও পড়িনি, রোযাও (নাফল) রাখিনি, তবে আমি নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তার রাসূলকে ভালোবাসি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে লোক যাকে ভালোবাসে, কিয়ামত দিবসে সে তার সাথেই অবস্থান করবে। তুমিও যাকে ভালোবাস তার সাথেই অবস্থান করবে। বর্ণনাকারী বলেন, তারা এ কথায় এতই সন্তুষ্ট হলেন যে, ইসলাম গ্রহণের পর মুসলিমদের আর কোন বিষয়ে এত খুশি হতে দেখিনি।
সহীহ, রাওযুন নায়ীর (১০৪), বুখারী, মুসলিম।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ।
২৩৮৭। সাফওয়ান ইবনু আসসাল (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, উচ্চ আওয়াযধারী জনৈক বিদুঈন এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! কোন একজন ব্যক্তি একটি সম্প্রদায়কে ভালোবাসে; কিন্তু সে তাদের সাথে গিয়ে মিলিত হতে পারেনি (অর্থাৎ তাদের পর্যন্ত পৌছতে পারেনি)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে (কিয়ামত দিবসে) সে তার সাথেই অবস্থান করবে।
হাসান, আর রাওয (৩৬০)।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আহমাদ ইবনু আবদা আয-যাববী-হাম্মাদ ইবনু যাইদ হতে, তিনি আসিম হতে, তিনি যির ইবনু হুবাইশ হতে, তিনি সাফওয়ান ইবনু আসসাল (রাঃ) হতে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এই সূত্রে মাহমূদ বর্ণিত হাদীসের মতোই হাদীস বর্ণনা করেছেন।
২৪০১। আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এর সূত্রে মারফুভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, মহামহিম আল্লাহ তা’আলা বলেছেনঃ আমি যে ব্যক্তির দুটি প্রিয় চোখ কেড়ে নিয়েছি; অতঃপর সে ধৈর্য ধারণ করেছে এটা আল্লাহর পক্ষ হতে হয়েছে বলে মনে করে এবং সাওয়াবের আশা করে, আমি তাকে জান্নাত ব্যতীত অন্য কোন কিছু প্রতিদান দিয়ে সন্তুষ্ট হব না।
সহীহ, তা’লীকুর রাগীব (৪/১৫৬)।
ইরবায ইবনু সারিয়া (রাঃ) হতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ।
৩/১৬৪০। সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ জান্নাতের একটি দরজার নাম ’রাইয়্যান’। কিয়ামতের দিন সেখান থেকে আহবান করা হবেঃ রোযাদারগণ কোথায়? যে ব্যক্তি রোযাদার হবে, সে উক্ত দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে এবং যে উক্ত দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে, সে কখনও পিপাসার্ত হবে না।
২/১৬৯০। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কত রোযাদার আছে যাদের রোযার বিনিময়ে ক্ষুধা ছাড়া আর কিছুই জোটে না। কত সালাত আদায়কারী আছে যাদের রাত জাগরণ ছাড়া আর কিছুই জোটে না।